জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, দীর্ঘ ১৫ বছর জামায়াতে ইসলামী কোনো রাজনৈতিক সভা সমাবেশ করতে পারেনি। অন্যায় অত্যাচারের স্বীকার হয়েছে। এখন সময় এসেছে জামায়াতে ইসলামী মানুষের কল্যাণের জন্য কাজ করবে। ৫ আগস্ট ছাত্র আন্দোলনের মাধ্যমে গণঅভ্যুত্থান হয়েছে। আওয়ামী লীগের সময় জামায়াতের একাধিক নেতাকর্মী হত্যা, খুন, গুমের শিকার হয়েছে। অনেক নেতাকর্মীকে অন্যায়ভাবে জেল ও ফাঁসি দেওয়া হয়েছে। জামায়াতে ইসলামী সুষ্ঠু সুন্দর একটি রাষ্ট্র গড়তে চায়।
আজ বৃহস্পতিবার ঝিনাইদহে নির্ধারিত অনুষ্ঠানে যাবার পথে সকাল ১০টায় মাগুরা শহরের ভায়না মোড়ে এক পথসভায় তিনি এসব কথা বলে। পথসভায় সভাপতিত্ব করেন জেলা জামায়াতে ইসলামীর আমির এমবি বাকের। এসময় কয়েক হাজার নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন।
এসময় জামায়াতে ইসলামীর আমির বলেন, বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনসহ বিগত ১৫ বছরে যাদেরকে অন্যায়ভাবে হত্যা করা হয়েছে আল্লাহ তাদেরকে যেন শহীদ হিসেবে কবুল করেন। শুধু আমরাই মজলুম ছিলাম না, এ দেশের ১৮ কোটি মানুষই ছিল মজলুম। সরকার ও তার ঘুষখোররা সিন্ডিকেট করে মানুষের জীবনকে শ্বাসরুদ্ধ করে দিয়েছিল। আমরা এগুলো থেকে মুক্তি চাই। বাংলাদেশ জামায়াতি ইসলামী এমন একটি দেশ চায়, এমন একটি রাষ্ট্র চায় যেখানে আল্লাহ তায়ালার বিধান অনুযায়ী সামাজিক সুবিচার কায়েম হবে। সেখানে মানুষের মধ্যে কোন বৈষম্য থাকবে না। যে যার ন্যায্য পাওনা হাতে পেয়ে যাবে। যুবকদের হাতে কাজ তুলে দেয়া হবে। জাতিগঠনে যুবকরা ভূমিকা রাখবে। বেকারত্বের অভিশাপে আর একটি যুবককেও আত্মহত্যা করতে হবে না। চাকরী পাওয়ার জন্য কোন দুষ্ট লোকের কাছে ঘুষ দিয়ে চাকরি নিতে হবে না। বিচারের জন্য কাউকে কারো দয়ার জন্য তাকিয়ে থাকতে হবে না। বাজারে গেলে কাউকে মাথায় হাত দিতে হবে না। এমন একটি বৈষম্যহীন রাষ্ট্র আমরা গড়ে তুলতে চাই।
তিনি আরও বলেন, ধনী এবং গরিব লোক সকলেই সম্মানের সাথে বসবাস করবে। মায়েরা থাকবে মায়ের মর্যাদায়, মেয়েরা থাকবে মেয়ের মর্যাদায়। তাদের ইজ্জতের উপর হাত দেয়ার সাহস কোন দুষ্ট কোন লম্পটের হবে না। সকল ধর্মের মানুষ তাদের ধর্মীয় কার্যকলাপ স সম্মান ও নিরাপত্তার সাথে পালন করবে। কাউকে নিরাপত্তা বা পাহারা দেয়ার প্রয়োজন হবে না। যদি মসজিদে পাহারা দেয়ার প্রয়োজন না হয়, তাহলে মন্দিরেও পাহারা দেয়ার প্রয়োজন হবে না। মসজিদেও যাতে কোনও ইমামের হাত থেকে মাইক কেড়ে নিতে না পারে, খতিবকে অপদস্থ করতে না পারে তার নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হবে। এমন একটি দেশ গড়তে আমরা দেশবাসীর সহযোগিতা চাই। ন্যায় এবং ইনসাফের ভিত্তিতে বৈষম্যহীন একটি মানবিক দেশ গড়ার স্বপ্ন দেখে জামায়াতে ইসলামী। এই যাত্রায় এই সফরে গোটা দেশবাসির সহযোগিতা চাই।
পথ সভায় বক্তব্য শেষে জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান ঝিনাইদহের উদ্দেশ্যে রওনা দেন।
